শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:৩৩ পূর্বাহ্ন
শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার) সংবাদদাতা : শ্রীমঙ্গলের চা শ্রমিকদের জন্য বরাদ্ধকৃত সরকারী অর্থ বিতরণে অনিয়মের অবিযোগ ওঠেছে। এ অভিযোগ তুলে বুধবার মানববন্ধন করেন উপজেলার গান্ধিছড়া চা বাগানের শ্রমিকরা।
শ্রমিকদের অভিযোগ, সমাজসেবা অধিদফতরের চা শ্রমিকের জীবনমান উন্নয়ন কর্মসূচি’র আওতায় এককালীন আর্থিক সহায়তা বিতরনে দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতি করা হয়েছে।
গান্ধিছড়া চা বাগানের চা শ্রমিক সন্তান নয়ন চন্দ্র নায়েকের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে গান্ধিছড়া চা বাগানের অর্ধশত চা শ্রমিক উপস্থিত ছিলেন।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, বাগান পঞ্চায়েত, ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য ও স্থানীয় চেয়ারম্যান মিলে তাদের আত্মীয় স্বজন ও পছন্দের মানুষদের সরকারী সহায়তার তালিকায় নাম উঠায়। এখানে অসহায় চা শ্রমিকদের থেকে যাদের অঢেল টাকা পয়সা আছে তারাই সরকারি সহায়তা পেয়েছে। অনেকে আবার টাকার ভাগ দিয়েও তালিকায় নাম তুলছেন।
মানববন্ধনে আসা এক বৃদ্ধা বলেন, আমার বাগানে কাজ করার ক্ষমতা নেই। অনেক কষ্ট করে জীবন চালাচ্ছি। আমার মতো অনেক দরিদ্র চা শ্রমিক রয়েছে। আমাদেরকে বাদ দিয়ে অপেক্ষাকৃত স্বচ্ছলদের হাতে আর্থিক সহায়তা দেয়া হয়েছে। এটা কেমন বিচার।
মানববন্ধনের সভাপতি নয়ন চন্দ্র নায়েক বলেন, আর্থিক সহায়তার মধ্যে দেখা গেছে অপেক্ষাকৃত বিত্তবানরাও টাকা পেয়েছে। সরকার চা শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়নের জন্য কাজ করছে। এখন যদি সরকারের টাকা সুবিধাবঞ্চিতরা না পেয়ে কমিশনভোগীদের হাতে কৌশলে চলে যায় তাহলে প্রকৃত জীবনমানের উন্নয়ন কিভাবে হবে। এমনও দেখা গেছে, যারা প্রকৃত চা শ্রমিক নয়, তাদের নামর এ তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে। চা বাগানে যারা প্রকৃত সুবিধাবঞ্চিত তাদের হাতে যেন এই সরকারি আর্থিক সহযোগিতা পৌছে এবং তা যেন মোবাইল বা ডিজিটাল ব্যাংকিং প্রক্রিয়ায় নিজেদের একাউন্টে দেওয়া হয় তাহলে তা ফলপ্রসূ হবে এবং এ ব্যাপারে স্থানীয় সংসদ সদস্যের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে গান্ধিছড়া চা বাগানের পঞ্চায়েতের সাধারণ সম্পাদক চঞ্চল বুনার্জী রিংকু এর সাথে মুঠোফোনে কথা বললে তিনি বলেন, মোবাইলে এ ব্যাপারে কিছু বলা যাবে না, কোথাও বসে আলোচনা করি করার প্রস্তাব রাখেন তিনি।
গান্ধিছড়া চা বাগানের পঞ্চায়েত সভাপতি কৃষ্ণদাশ বলেন, আমি মাত্র ২০ জনের তালিকা দিয়েছি। যারা সবাই অস্বচ্ছল, এর বেশী কিছু আমার জানা নেই।’ তবে গান্ধিছড়া চা বাগানের তালিকায় মোট ১১১ জনের তালিকা পাওয়া যায়।
সাতগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিলন শীল বলেন, তালিকা তৈরীর কাজ আমার একার নয়। পঞ্চায়েত সভাপতি, ইউপি সদস্যরা মিলে তৈরী করেছেন। আর্থিক সহায়তা পর্যায়ক্রমে সকলকে দেয়া হবে।
শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন নজরুল ইসলাম বলেন, এই সহায়তা মুলত দরিদ্র ও অস্বচ্ছল চা শ্রমিকদের জন্য। যদি নীতিমালার বাহিরে কারো নাম তালিকায় আসে তাহলে আমরা তদন্ত সাপেক্ষে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করব।